লেখক : শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ:)
প্রকাশনী : কালান্তর প্রকাশনী
বিষয় : ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্য
রাব্বুল আলামিনের প্রিয়তম সৃষ্টি মানুষ পৃথিবীতে নিয়ে আসে স্বাধীনতা। কিন্তু পরবর্তীতে আলস্য, ভোগ-বিলাস, আত্মপরিচয়, ও জিহাদ-বিমুখতার দরুণ নিজেদের জীবনে টেনে আনে পরাধীনতা। পরাধীনতা মানবজীবনের জন্য ভয়ঙ্কর এক অভিশাপ। এটা একধরনের চারিত্রিক ব্যাধি। এ অভিশাপে মানবতা হয়ে যায় শক্তিমানের পণ্য। পরাধীন জাতি হারিয়ে ফেলে ইনসানিয়াতের সৌকর্য। রুদ্ধ হয়ে যায় তাদের আত্মবিকাশের পথ। তবে এটা চিরন্তন কোনো ব্যাধি নয়। ভাইরাসগুলো সরাতে পারলে মানুষ পরাধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে পেতে পারে স্বাধীনতা।মোগল বাদশাহদের দ্বীনবিমুখতা ও ভোগবিলাসের অভিশাপে আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতা চলে যায় সাম্রাজ্যবাদী বেনিয়া ইংরেজদের হাতে।উলামায়ে কেরাম সচেতন করে এসেছিলেন শাসক কমিউনিটিকে। কিন্তু ভোগের নেশায় মত্ত শাসকশ্রেণির অযোগ্যতার দরুণ উপমহাদেশের স্বাধীনতা পরাধীনতায় রূপান্তর হয়ে যায়; তখনো কিন্তু সেই সচেতন উলামায়ে কেরাম হাল ছেড়ে দেননি। তাঁরা চালিয়ে যেতে থাকেন স্বাধীনতা উদ্ধারের প্রয়াস। সেই প্রয়াস আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ভবিষ্যতের পাথেয়। চেতনার স্মারক। মুক্তি ও আজাদির মাইলস্টোন।স্বাধীনতা প্রয়াসের সেই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের অন্যতম একটি হচ্ছে ‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’। আলোচ্য গ্রন্থে উঠে এসেছে সেই সোনালি আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনের অজানা ও বিস্ময়কর অনেক বিষয়। যা ভবিষ্যতের যে কোনো মুক্তি আন্দোলনের জন্য হতে পারে শিক্ষার উপাদান। সর্বোপরি এ বইয়ের মাধ্যমে জানা যাবে ভারতবর্ষের তৎকালীন অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক অবস্থা ও স্বাধীনতা আন্দোলনে উলামায়ে কেরামের প্রকৃত অবস্থান। আরও জানা যাবে উসমানি খেলাফতের তখনকার অবস্থা, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে হেজাজের গভর্নর ও আফগান শাসকের ভূমিকা, ব্রিটিশের কূটচাল, জার্মান, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, জাপানসহ তখনকার উল্লেখযোগ্য দেশসমূহের অবস্থান। জানা যাবে এত সুক্ষ্ম এবং নিখুঁত পরিকল্পনা থাকার পরও আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার কারণ।‘রেশমি রুমাল আন্দোলন’ যদি ব্যর্থ না হত, তাহলে হয়ত পৃথিবীর ইতিহাস অন্যরকম লেখা হত। আমরাও দেখতে পেতাম অন্যরকম এক পৃথিবী। হয়ত আজও স্বগর্বে দাঁড়িয়ে পুরো পৃথিবী শাসন করতেন উসমানি খলিফারা।