প্রাচ্যতত্ত্ব একটি প্রকল্প, যেখানে জ্ঞানগত প্রণোদনা থাকলেও তা নয় নিছক জ্ঞানতাত্ত্বিক। এতে আছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ভৌগলিক এমনকি সামরিক লক্ষ্য, যা পাশ্চাত্যের ধর্ম, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও জীবনদর্শনের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে অবিরাম। প্রাচ্যকে দেখে শাসকের চোখ দিয়ে। যেন সে জ্ঞান ও সংস্কৃতিতে পাশ্চাত্যের উপনিবেশ হলেই বাঁচে। প্রাচ্যবাদের বিশেষ ও প্রধান ধারা ইসলামকেন্দ্রিক। এখানেই তার আসল মনোযোগ। এটাই তার লক্ষ্যকেন্দ্র। ইসলামপ্রশ্নে শত শত বছর ধরে তার চর্চা। এ চর্চার মধ্য দিয়ে সে ইসলামকে হেয় করা, বিকৃত করা, অপরাধী বানানো এবং দণ্ডিত করার কাজ করতে চায়। কিছু ইতিবাচক ও আন্তরিক জ্ঞানপ্রয়াসের নজির থাকলেও প্রাচ্যবাদ বিপুল উদ্যম ও সাধনা নিয়োগ করেছে ইসলামের নেতিবাদি চর্চায়। মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের তরফ থেকে এসব নেতিবাদী চর্চার প্রতিক্রিয়ায় যেসব জ্ঞানপ্রয়াস সংঘটিত হয়েছে, পরিমাণে তা বিপুল না হলেও অপ্রতুল নয়। এক্ষেত্রে শায়খ মুস্তফা আসসিবায়ীর রচিত কিছু গ্রন্থ গুরুত্বের বিচারে শীর্ষচারী। তিনি রচনা ও বিতর্কে ইসলামপ্রশ্নে প্রাচ্যবাদের ভ্রান্তিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। ‘আল ইস্তেশরাক ওয়াল মুস্তাশরিকুন’ এ তুলে ধরেছেন প্রাচ্যবাদের প্রাথমিক পরিচয় ও তাদের জ্ঞান ও প্রয়াসের সারাৎসার। প্রয়োজনের বিবেচনায় বইটির অনুবাদ বাংলাভাষায় হওয়া উচিত ছিলো আরো আগেই। শেষ পর্যন্ত কাজটি হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারুক অনুবাদ করেছেন বইটি।
অনুবাদে তার হাত ও গতি বেশ আশাপ্রদ। অল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য অনেকগুলো গ্রন্থ তিনি অনুবাদ করেছেন। উপযোগ ও আবেদনের বিচারে এসব অনুবাদকর্ম বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার। বইটি ব্যাপকভাবে পঠিত হোক। লেখক ও অনুবাদককে আল্লাহ দান করুন উত্তম বিনিময়।-মুসা আল হাফিজ