বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বজনমান্য শিক্ষক ড. পাশা এই বইয়ে লিখেছেন, লেখাপড়ার পদ্ধতিগুলো আমার ছাত্র এবং শিক্ষক-জীবনের কিছু বিশেষ অভিজ্ঞতার আয়না থেকে সাজিয়েছি। তাত্ত্বিক কোনো আলোচনার সন্নিবেশ আমি করিনি।
প্রতিটি শিক্ষাবর্ষকে সফল করে তোলার জন্য অন্যতম সেরা সহায়ক বিষয় হল, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার আদর্শপদ্ধতি সর্বোচ্চ পরিমাপ সম্পর্কে অবগতি লাভ করা। এবং অল্প মেহনতে সর্বোচ্চ পরিমাণ লাভবান হওয়ার জন্য তাদের সামনে এ বিষয়ের সকল পথ ও পন্থা সুস্পষ্ট থাকা উচিত।
এ উদ্দেশেই আমার প্রিয়সন্তান শিক্ষার্থীদের জন্য কথাগুলো লিখেছি। লেখাপড়ার জন্য যথার্থ পথ কোনটি, যেন নিজেরাই আবিষ্কার করতে পারে, সে উদ্দেশে আমি তাদের সামনে আলোকিত একটি পথচিত্র এঁকে দিয়েছি।
অনেক ছাত্র আমার কাছে অভিযোগ করেছে, সারাদিন কিতাবে উবু হয়ে থাকি, বইয়ের পাতায় দীর্ঘ রাত বুঁদ হয়ে থাকি, কিন্তু এ পরিশ্রমের ফল পাই না। যে ফল আসে, তা নগণ্য!
অনেক ছাত্রের হৃদয়ের নিরাশ-ধ্বনি আমাকে দুঃখ দিয়েছে। তারা একটি অধ্যায় শুরু করে, শেষ হতে না হতেই শুরুটা ভুলে যায়।
অনেক ছাত্র বলেছে, অলসতা ঝেড়ে ফেলে উদ্যম নিয়ে দরসে/ক্লাসে যায়। পড়তে বসে। কিন্তু কোনো গত্যন্তর তার হয় না। ক্লাসে স্থির হয়ে বসে থাকতে পারে না। বিরক্তি আসে। বিরাগ হয়ে ওঠে। কিতাব ও লেখাপড়া থেকে আপনাআপনিই বিমুখতা পেয়ে বসে। মুখব্যাদান করে হাই তুলে স্বস্তি খোঁজে। হাতদু’টো ছড়িয়ে আড়মোড় খেয়ে আলস্য ভাঙ্গে। বসে থাকতে পারে না। কিতাব বন্ধ করে। এরপর যা হওয়ার, তাই হয়।
বক্ষমান পুস্তকটি এসব ছাত্রের সমীপে রেখেছি। এ পুস্তকে তারা তাদের সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা পাবে, ইনশাআল্লাহ।
ড. রাফাত পাশা ছিলেন একজন অতি উচ্চমানের শিক্ষক। বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার। আরবী ভাষা-সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ, লেখক ও গবেষক। তাঁর এই পুস্তকের পাতায় পাতায় চিত্রিত হয়েছে একজন ছাত্রের ভেতরের শক্তি জাগিয়ে তোলার আকুতি। অঙ্কিত হয়েছে একজন শিক্ষার্থীর সুপ্ত সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলার পথচিত্র। যোগানো হয়েছে লেখাপড়ার আঁকাবাঁকা পথঘাটে অবাধে বিচরণ করার পাথেয়। দেখানো হয়েছে শিক্ষা অর্জনের সহজ ও সোজা পথ। যেন শিক্ষাদীক্ষার বর্ণিল ভূবন! সাজানো স্বপ্নময় পৃথিবী!