সূ চি
* ভূমিকা
* বিদ্যাকৌশল: পড়ালেখায় ভালো করা কি শেখার বিষয়
* পড়ার মোটিভেশন
* ভালো ছাত্র হবার পরিকল্পনা
* ভালো করে পড়া ও বোঝা
* সঠিক নিয়মে লেখাপড়া
* পড়ার প্রস্তুতি: পরিবেশ ও সময়
* পড়ার পরিবেশ
* পড়ার মোক্ষম সময় কোনটা
* শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা লাভ
* শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা: কীভাবে লেকচার শুনবেন ও অংশ নিবেন
* ক্লাসনোট লেখার গুরুত্ব
* কী করে ফাটাফাটি ক্লাস নোট তুলবেন
* বিদ্যাকৌশল: পড়ার ও শেখার নানা কার্যকর কায়দা
* শেখার নানা কায়দা
* গ্রুপ স্টাডি
* নানারকমের বিষয় পড়ার মোক্ষম উপায়
* দ্রুতপঠন: কী করে দ্রুত পড়বেন
* দ্রুতলিখন: কী করে লিখবেন দ্রুত
* দ্রুত পড়ে বোঝা ও শেখার উপায়: তিনটি কার্যকর পদ্ধতি
* মনে রাখার সহজ উপায়
* মনে রাখার কিছু সহজ পরামর্শ
* মন বসানো মনোযোগ বাড়ানো এবং গুছিয়ে পরিকল্পনা করা
* পড়ায় মন বসানো
* মানসিক স্থিরতা, আবেগকে বশে আনা
* পড়া ভালো লাগানোর উপায়
* মনোযোগ বাড়ানোর কৌশল
* পরিকল্পনার পরি, দিশাহারার দিশা আর ঘুম আনয়ক নাকেতেলগরিদম
* পোমডরো টেকনিক
* পরিকল্পনা, নয় শুধু কল্পনা: পরিকল্পনা করার কার্যকর পদ্ধতি
* পরীক্ষা পরীক্ষা পরীক্ষা
* পরীক্ষা পরীক্ষা পরীক্ষা
* পরীক্ষায় ভালো করার উপায়
* পরীক্ষার প্রস্তুতি
* মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি
* পরীক্ষা প্রস্তুতির পাঁচ দিনের পরিকল্পনা
* পরীক্ষা প্রস্তুতির এক দিনের পরিকল্পনা
* পরীক্ষার পূর্বরাত্রি
* পরীক্ষার দিন
* ‘দেখায়া দিব’ সিনড্রোম থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
* পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে কী করবেন
* ছুটির সময়কে কাজে মোক্ষমভাবে লাগানো
* পড়ার আনুষঙ্গিক বিষয়
* পড়ালেখা ও পার্টটাইম কাজ বা টিউশনি একসাথে চালানো
* আলসেমি হতে বাঁচবেন কীভাবে?
* হতাশা কাটানো বা আত্মবিশ্বাস বাড়ানো
* পরীক্ষাভীতি বা নার্ভাসনেস কাটানো
* পড়াশোনায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার
* অভিভাবকদের জন্য
* আপনার সন্তানকে কীভাবে পড়ার ব্যাপারে সাহায্য করবেন
* শেষ কথা
ভূমিকা
পড়াশোনায় ভালো করতে কে না চায়? আর পড়াশোনা করা কেবল আমাদের শিক্ষাজীবনেরই অংশ নয়; বরং সারাজীবনই আমরা কাজের প্রয়োজনে অথবা অন্য কোনো দরকারে কিছু না কিছু শিখে থাকি বা শেখার চেষ্টা করি।
এই চেষ্টায় কেউ সফল হয়, কেউ আবার পারে না।
কারও জন্য পড়াশোনা করা, ভালো ফলাফল করা, ভালো করে কিছু শেখা খুব সহজ কাজ।
আবার কারও জন্য এটা খুবই কঠিন একটা কাজ।
কিন্তু কেন? মেধা? মেধা একটা ব্যাপার বটে, কিন্তু একমাত্র ব্যাপার না। পড়াশোনা করতে গেলে, কিছু শিখতে গেলে কেবল মেধা নয়, এর সাথে সাথে লাগে কিছু কৌশল জানা। ভালো করে শেখার, মনে রাখার এবং বুঝে-শুনে সেটা কাজে লাগানোর কায়দাকৌশল।
এটা যারা জানে, তারা ভালো ছাত্রছাত্রী, অল্প সময়েই পড়া শেষ করে ও শিখে ফেলে তারা পরে পরীক্ষাতেও তা লিখে আসতে পারে, ভালো ফল করে। আর যারা জানে না, তারা অনেক চেষ্টা করেও সে রকম ভালো ফলাফল পায় না।
মেধা জন্মগত বটে, কিন্তু গোপন কথাটা বলে দিই, মেধা কিন্তু কারও ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার প্রধান নিয়ামক না। অনেকগুলো ফ্যাক্টরের মধ্যে মেধা একটি মাত্র ফ্যাক্টর। এবং সুখবরটা হলো চেষ্টা দিয়ে, কায়দাকৌশল শিখে মেধার কমতিটা পুষিয়ে নেওয়া অবশ্যই সম্ভব।
এই বইটাতে আসলে ভালো করে সঠিক নিয়মে পড়াশোনা করা, কোনো কিছু শেখার কায়দাকৌশল নিয়েই আলোচনা করেছি, আর এই কায়দাগুলোর নাম দিয়েছি বিদ্যাকৌশল।
ভালো ছাত্ররা এই বিদ্যাকৌশল জানে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা এই কৌশলগুলো অন্যদের জানাতে চায় না, অথবা মেধার চেয়ে এই বিদ্যাকৌশলের জোরেই যে তারা ভালো ফলাফল করছে, পাচ্ছে সাফল্য, সেটা তারা জানে না। বইটি লেখার উদ্দেশ্যই হলো সবার জন্য এই পড়ালেখায় ভালো করার কৌশলগুলো গুছিয়ে তুলে ধরা।
আমি নিজে শিক্ষাবিশেষজ্ঞ নই। তবে বিনয়ের সাথে বলতে চাই, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আমি নিজে ভালো ফলাফল করার সাথে সাথে প্রচুর ভালো ছাত্রছাত্রীর সাথে পড়েছি। এখন শিক্ষক হিসেবে অনেক সময়েই ভালো শিক্ষার্থীদের খুব কাছ থেকে দেখছি। এ বইটি তার ভিত্তিতেই লেখা।
বইটা কাদের জন্য?
বিদ্যাকৌশল বইটি আসলে সব রকমের শিক্ষার্থীর জন্যই লেখা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়— সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাই এ বইটি পড়ে উপকৃত হবেন বলে আমার বিশ্বাস। শুধু তা-ই নয়, যারা এখন শিক্ষার্থী নন, কিন্তু চাকরি বা অন্য দরকারে কিছু শিখতে চান দ্রুত এবং কার্যকরভাবে, তাদের জন্যও এ বইটিতে আলোচিত বিদ্যাকৌশল কাজে আসবে। এই বইটা কীভাবে পড়বেন?
বইটির শুরুতে আলোচনা করা হয়েছে পড়াশোনার মোটিভেশন আনা এবং সঠিক নিয়মে পড়ালেখা করার গুরুত্ব নিয়ে একনজরে কিছু পরামর্শ দিয়ে। এরপর পড়াশোনা করার প্রস্তুতি পর্বে বলা হয়েছে পড়ার পরিবেশ ও মোক্ষম সময় নিয়ে। শ্রেণিকক্ষে বা লেকচার শুনতে গিয়ে কীভাবে ক্লাসনোট তুলবেন ও এ থেকে উপকৃত হবেন, তা আলোচনা করার পরে শেখার নানা কায়দা, দ্রুত লিখন ও পঠন এবং দ্রুত কোনো কিছু পড়ে বোঝার ওপরে এবং পড়া মনে রাখার ওপরে বেশ কিছু কৌশল উপস্থাপন করেছি। পড়াশোনায় ভালো করতে গেলে মানসিক স্থিরতা এবং মনোযোগ বাড়ানোর বিকল্প নাই, পরের কয়েকটি অধ্যায়ে তা-ই আলোচিত হয়েছে। পরীক্ষার প্রস্তুতির ওপরে বেশ কয়েকটি অধ্যায়ে পরীক্ষার জন্য গুছিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া এবং পরীক্ষার আগে, পরীক্ষার দিনে ও পরে কী করতে হবে, তা বলেছি। সবশেষে বলা হয়েছে আলসেমি থেকে বাঁচা এবং হতাশা কাটিয়ে পরীক্ষা-ভীতিকে জয় করে এগিয়ে যাওয়ার কিছু পরামর্শ। বইটি শেষ করেছি অভিভাবকদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়ে।
শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হিসেবে নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছি সেই পাঁচ বছর বয়স থেকে। আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই, তাদের কাজে আমার অপরিসীম ঋণ, যা কখনোই শোধ হবে না। আশা করি এই বইটির মাধ্যমে আগামী প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন, পড়াশোনা করতে, নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন সাফল্যের সাথে। সব শিক্ষার্থীর প্রতি রইল শুভকামনা। বিদ্যাকৌশলের প্রয়োগ সফল হোক আপনাদের জীবনে।