তারুণ্যের জোয়ার তাচ্ছিল্যের সাথে ছুড়ে ফেলতে চায় ছকবাঁধা জীবন। দুনিয়াকে উপভোগ করার উদাত্ত আহ্বানে জাহিলিয়াতের স্রোতে ভেসে বেড়ায় তারা। ভাসতে ভাসতে কেউ কেউ ডুবে যায় ব্যর্থতা ও হতাশার অতল গভীরে। কেউ বা গিয়ে পড়ে তরীহীন গভীর সমুদ্রে। ভেসে বেড়ায় দিকভ্রান্ত পথিকের মতন। তবে ক্ষতি যা হওয়ার, তা তো হয়েই যায়। লেখক চেষ্টা করেছেন সেই ক্ষতে একটুখানি ওষুধের প্রলেপ দিতে। অগ্নিকুণ্ডের লাভার দিকে ঝাঁকবেঁধে ছুটে চলা কিশোরী-তরুণীদের শাসনের সুরে লেখক বলতে চেয়েছেন—ওরে বোকা! ওটা আলো নয়, আগুন। ওখানে সুখ নেই কোনো, আছে দগ্ধ হওয়ার রসদ।
গদ্যে-পদ্যে-প্রবন্ধে অনবদ্য হয়ে উঠেছে বইখানি। আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত থেকে হইহই করে জ্বলন্ত আগুনের দিকে ছুটতে থাকা একঝাঁক তরুণীকে তিনি ফেরাতে চেয়েছেন। লাগাম টানতে চেয়েছেন তাদের পদযাত্রায়। কখনো অনুযোগে, কখনো অনুরোধে, কখনো বা ধমকের সুরে।
বইয়ের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য, প্রতিটি পৃষ্ঠা যেন একেকটা জীবন্ত সত্তা। তারা কথা বলতে পারে। জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে উদাসীন, দুনিয়ার মোহে বুঁদ হয়ে থাকা, নাচ-গান নিয়ে মত্ত, ছন্নছাড়া, উচ্ছৃঙ্খল তরুণীদের উদ্দেশ্যেই এই বইখানা লেখা। যতটা উচ্ছৃঙ্খলই সে হোক না কেন, এই বই তাকে দু-দণ্ড স্থির হয়ে বসে ভাবতে বাধ্য করবে। তার মধ্যে কিঞ্চিত পরিমাণে হলেও অনুশোচনাবোধ জাগ্রত করবে। তার চোখ দুটো সামান্য হলেও অশ্রুসিক্ত করবে, ইন শা আল্লাহ।