ইরাক যুদ্ধ আন্তর্জাতিক রাজনীতির ছাত্রদের কাছে একটি বহুল আলোচিত বিষয়। এই যুদ্ধ নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ এবং এর সাথে ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধকে তুলনা করা যাবে না। ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধে যেখানে জাতিসংঘের অনুমোদন ছিল, সেখানে ২০০৩ সালের যুদ্ধ জাতিসংঘ কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি। ১৯৯১ সালে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি মিত্রবাহিনী ইরাকে বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল এবং কুয়েতকে ইরাকের দখলমুক্ত করেছিল। বারো বছর পর ২০০৩ সালে সেই মিত্রবাহিনীর অনেকই এখন আর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নেই। ব্রিটেনের সহযোগিতা পেলেও ফ্রান্স ও জার্মানির সাহায্য ও সহযোগিতা নিশ্চিত করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। উপরন্তু ইরাক যুদ্ধকে (২০০৩) কেন্দ্র করে পশ্চিমা মৈত্রী জোটে যে ফাঁটল দেখা দিয়েছে তাতে করে আগামীতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ^ রাজনীতিতে একটি আলাদা অবস্থান নিতে পারে। ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনীর ইরাক দখলের পর ইরাকের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি কিভাবে বিকশিত হয়, সেটাও দেখার বিষয় এখন। এই গণতন্ত্রকে অনেকে ইতোমধ্যে ‘পোষাকী গণতন্ত্র’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কেননা যাদেরকে নিয়ে প্রশাসনিক পরিষদ গঠন করা হয়েছে, তাদের অনেকেই দীর্ঘদিন ইরাকি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না।
একুশ শতকে বিশ্বব্যবস্থা কিভাবে বিকশিত হবে, ইরাক যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে তার একটা নমুনা আমরা পেলাম। বুশ প্রশাসন গেল সেপ্টেম্বরে ‘আগাম যুদ্ধের যে নীতি প্রণয়ন করেছিল এবং যে নীতি ইরাক আক্রমণের মধ্যে দিয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে তা নয়া বিশ্ব ব্যবস্থাকে একটি বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। বিভিন্ন তত্ত¡ ও গবেষকদের বিশ্লেষণ নিয়ে লেখক ইরাক যুদ্ধ পরবর্তী নয়া বিশ্বব্যবস্থাকে চিত্রিক করার চেষ্টা করেছেন।