গজগজ করতে করতে বাবা বললেন, ‘মেয়ে দেখতে গিয়ে দেখতে পারিসনি। পরেরবার গিয়ে মেয়ের জায়গায় তার বিবাহিতা বোনকে দেখে চলে এসেছিস। এখন বলছিস, না দেখেই বিয়ে করবি! আজীবনের ব্যাপার এটা। পরে পছন্দ না হলেও মেয়ের সাথে ইনসাফ করবি, এই গ্যারান্টি দিতে পারবি?’বাবার কথা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু আসিফ ইকবালের আবেগী মন এই যুক্তির উত্তরে একটাই কথা বলে ‘হতে পারে পছন্দ হবে।’ পছন্দ হবে না, এই কন্ডিশনে যেতেই আগ্রহী না সে। আপাতত তার সঙ্গী কল্পনা। তার মনের ভেতর নব্বই দশকের টেপ-রেকর্ডার বাজে। মনের মতো অনুষ্ঠানসূচি সেই টেপে। কিছুক্ষণ মরগান ফ্রিম্যান এসে ভরাট কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের ‘অপরিচিতা’ পাঠ করে চলে যায়। কিছুক্ষণ গান বেজে ওঠে। “আনদেখি আনজানি সি, পাগলি সি, দিওয়ানি সি, জানে ও ক্যায়সি হোগি রে…” তার মনে প্রশ্ন, সংশয় আসে না এমন কিন্তু না! প্রশ্ন আসে, এত বড় রিস্ক নেয়া ঠিক হবে? সংশয় জাগে। কিন্তু সব প্রশ্ন, সংশয়কে ধূলোয় মিশিয়ে দেয় আবেগ। দেখা যাক না কী হয়! না দেখার মধ্যে একটা ভীষণ রকম ‘করতে না চাওয়া’ অপেক্ষা আছে, উত্তেজনা আছে, ভয় আছে আবার আশাও আছে। সব মিলিয়ে একটা থ্রিলিং অনুভ‚তি। সেই অনুভ‚তিকে সম্বল করেই আসিফের দিন কাটছে। আর ক’টা দিন, তার পরই অপরিচিতার পরিচয় মিলবে। আকুতি জানিয়ে বলতে হবে না, “ওগো অপরিচিতা, তোমার পরিচয়ের শেষ হইলো না, হবে না…”।আগে নাকি এমন হতো, পাত্রী দেখতো ছেলের বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন। ছেলে না দেখেই বিয়ে করে ফেলতো। এমন ঘটনা আমাদের দাদা-দাদিদের যুগে ঘটতো।ভাবুন তো, একই রকম ঘটনা যদি এই যুগে এসেও ঘটে! এরকমই একটি বিয়ের গল্প শুনতে যাচ্ছেন পাঠক। কেমন হবে এই বিয়ে? সেই অপরিচিতাই বা কেমন হবে? তাকে কি আসিফের পছন্দ হবে? কেমন হবে তাদের সংসার? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে ‘বউনামা’ পড়ার পর।